Largest Domain Hosting Market

Domain, Hosting and Information Technology Related Web Site

কী করে একজন মার্ক জাকারবার্গের জন্ম বাংলাদেশে হতে পারে? (মাস্ট রিড)

“আপনাকে ঝুঁকি নিতে হবে। তা নিজের কিংবা ধার করা টাকা হোক। ব্যবসায়ে উন্নতির জন্য ঝুঁকি অত্যাবশ্যক।”
– জে.পল গেটি।
একটি প্রচলিত বিদেশি প্রবাদে বলা হয়েছে, ‘ঝুঁকি- কাউকে যদি আগুনে ঝাঁপ দিতে হয় এবং সে যদি এর ব্যাপকতা জানে তাহলে সে ঝাঁপ দেবে না। কিন্তু সে যদি এর ব্যাপকতা না জানে তাহলে সে ঝাঁপ দেবে এবং দশবারের মধ্যে ছয়বার সে সফল হবে।’
আমাদের দেশের তরুণরা তথ্যপ্রযুক্তিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য বয়ে আনছে। অগণিত তরুণ আইটি খাতে কাজ করছে। অনেক তরুণ উদ্যোক্তা ইতিমধ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে বেশিরভাগই অল্পতেই থেমে যাচ্ছে। হতাশ হচ্ছে। কেউ কেউ মূলধন ও পৃষ্ঠপোষকতার আশায় বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে প্রচুর সম্ভাবনা। অথচ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন। খান ফাউন্ডেশন থেকে শুরু করে ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ পর্যন্ত বাংলাদেশি।
সত্যি কথা বলতে কী আরেকজন মার্ক জাকারবার্গের কোনও প্রয়োজন নেই আমাদের কিংবা বিশ্বের। মার্ক জাকারবার্গ যা করার তা করে ফেলেছেন। তার সৃষ্টি ফেসবুক জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। তাই আরেকটি ফেসবুক গড়ে তোলার কোনও দরকার নেই।
তাহলে কী করে একজন মার্ক জাকারবার্গের জন্ম বাংলাদেশে হতে পারে! মার্ক জাকারবার্গ হতে চাওয়ার মানে এই নয় যে তিনি যা করেছেন তা-ই করতে হবে।
করে একজন মার্ক জাকারবার্গের
মার্ক জাকারবার্গের মাথায় ফেসবুকের আইডিয়াটা এসেছিল কীভাবে? শূন্য থেকে কীভাবে তিনি সবচেয়ে কম বয়সী বিলিওনিয়ারে পরিণত হলেন? তার এবং ফেসবুক প্রতিষ্ঠা থেকে কী শিক্ষা নেওয়ার আছে? প্রশ্নগুলো গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনিও মার্ক জাকারবার্গের মতো একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান!
মার্ক জাকারবার্গকে নিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর একজন তরুণ উদ্যোক্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আইটি খাতে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অনুপ্রেরণা ও দৃষ্টান্ত মার্ক জাকারবার্গ। তরুণ এ বিলিওনিয়ারকে নিয়ে লেখা হয়েছে প্রচুর। তার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তা কাজে লাগাতে পারলে যেকোনও তরুণ উদ্যোক্তাও হতে পারেন ভবিষ্যতের মার্ক জাকারবার্গের মতো আরেকজন সফল ব্যক্তি।
স্বপ্ন দেখা
অনেকেই ভেবে থাকেন মার্ক জাকারবার্গ এমনি এমনি বিলিওনিয়ার হয়ে গেছেন। তারা মনে করেন আঙ্গুল দিয়ে কি-বোর্ডের সাহায্যে ফেসবুক তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু এটা সঠিক নয়। রাতারাতি সাফল্য আসেনি তার। একটি স্বপ্ন থেকেই তার যাত্রার সূচনা হয়েছিল। স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। তাই তো নেপোলিওন বলেছেন, ‘ইচ্ছাতেই সব সাফল্যের সূচনা’। যদি মার্ক জাকারবার্গের সাফল্য নিজের জীবনে চান, তার মতো হতে চান তাহলে এর জন্য ইচ্ছা দিয়েই আপনার যাত্রা শুরু করতে হবে।
জীবনে কী চান? পরবর্তী দশ বছরে নিজেকে কোথায় নিয়ে যেতে চান? মৃত্যুর পর কী নিয়ে আপনি স্মরণীয় হতে চান? এ বিষয়গুলো ঠিক করার মাধ্যমেই প্রথম পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আপনাকে।
চিন্তাকে প্রসারিত করুন
কিন্তু জাকারবার্গের স্বপ্নটা ছোট ছিল না। তার বন্ধুরা এটাকে কলেজ প্রকল্প হিসেবে উদ্ভাবন করে কিন্তু তিনি এটাকে বিশ্বের মানুষের যোগাযোগের ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে সংযোগের মধ্যে নিয়ে আসেন। তা পরিণত হয় বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে। আপনার ছোট ব্যবসার পরিকল্পনায় কী দেখতে পাচ্ছেন? ভবিষ্যতে কোথায় দেখতে চাইছেন? লাখ টাকা নাকি কোটি টাকার কোম্পানি চান? মনে রাখবেন সাফল্য এমনি এমনি আসে না। কৌশলগত পরিকল্পনা প্রয়োজন হয়। আপনার চিন্তাকে প্রসারিত করে ভবিষ্যতের লক্ষ্য ঠিক করুন।
ক্ষুদ্র আকারেই শুরু করুন
মার্ক জাকারবার্গের বড় স্বপ্ন এবং চমৎকার পরিকল্পনা ছিল। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বিশ্বব্যাপী একটি প্রকল্পের যার বতর্মান মূল্য বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যদিও তিনি শুরু করেছিলেন খুব ছোট আকারেই। ক্ষুদ্রাকার শুরুতে তিনি নিরাশ ছিলেন না। বড় মূলধন ও তহবিলের অপেক্ষা না করেই তিনি শুরু করে দিয়েছিলেন। তাই আপনিও যত ছোটই হোক শুরু করে দিন। বলা তো যায় না কোথায় সাফল্য লুকিয়ে আছে।
নিজের ওপর আস্থা রাখুন
নিজের ওপর আস্থা যেকোনও অভিযাত্রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্ক জাকারবার্গের তা যথেষ্ট ছিল। অন্যের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আপনি কখনওই সফল ব্যবসায়ী হতে পারবেন না। আপনাকে ব্যবসা শুরু করতে হবে নিজের আস্থা থেকে এবং অবশ্যই নিজে যা করতে পারবেন সেখান থেকেই শুরু করা উচিত। নিজেকে কখনও ছোট ভাববেন না। নিজের ওপর দৃঢ়তার সঙ্গে আস্থা রাখুন। ট্রিপি হওকিনসের মতে, ‘আপনি পাগল এবং এজন্য আপনার গর্বিত হওয়া উচিত। যা বিশ্বাস করো তার সঙ্গে লেগে থাকো।’
নিজের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিন
আপনার আকাঙ্ক্ষা কী? নিজের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের জন্য কী আপনি প্রস্তুত? নিজে আকাঙ্ক্ষার জন্য যেকোনও কিছু ত্যাগ করতে রাজি আছেন? মার্ক জাকারবার্গের মতো সফল হতে চাইলে এসব প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিতেই হবে।
শৈশব থেকেই নিজের ভেতর লালন করা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে লেগেছিলেন জাকারবার্গ। আইন ভাঙতে গিয়ে পিছপা হননি তিনি। সবাই তার সাফল্যের কাহিনী পছন্দ করে কিন্তু খুব কম লোকই জানে যে নিজের আকাঙ্ক্ষাকে বাঁচিয়ে রাখতে কলেজ থেকেও বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল তাকে। ছোট্ট এই ত্যাগ তাকে বিশ্বের বিলিনিওয়ারদের একজনে পরিণত করেছে।
করে একজন মার্ক জাকারবার্গের
সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিন
মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি শুধু একটা জিনিসই চাই, আমি জীবিত থাকতে কেউ যেন আমাকে নিয়ে কোনও চলচ্চিত্র না বানায়।’
সফল উদ্যোক্তাদের মতোই মার্ক জাকারবার্গকেও অনেক সমালোচনার মুখোমুখী হতে হয়েছে। সাফল্যের পথে সমালোচনা আসবেই এবং তার মুখোমুখী হওয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে। আপনার পেছনে সমালোচনার সুযোগ দেবেন না। আরও ভাল করার জন্য নিজেকে উৎসাহ দিয়ে সমালোচনার জবাব দিন।
পরিশ্রমী হোন
সফলতার আনন্দ আসার আগে কষ্টকর কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়। কেউই নিজের পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে সাফল্যের শীর্ষে আরোহণ করতে পারে না। সফল উদ্যোক্তাদেরও কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। যখন অন্যরা ঘুমিয়ে থাকে তখনও সফলরা নিজেদের সফল করতে কাজে ব্যস্ত থাকেন। আপনাকেও তা করতে হবে।
প্রতিযোগিতায় ভীত না হবেন না
মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা
মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি শুধু বিশ্বকে উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই ভাবি।’
গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ফেসবুক কীভাবে টিকে আছে বলে আপনি মনে করেন?
উত্তরটা হলো মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুকের লক্ষ্য অর্জনে সব সময় অবিচল ছিলেন। ওয়ারেন বাফেট, বিল গেটস, অ্যান্ড্রু কারনেগিদের মতো সফল উদ্যোক্তারাও মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার কথা বলেছি। বিভিন্ন লক্ষ্যের দিকে ছুটলে সাফল্যের পরিমাণ কমে যায়। সর্বোচ্চ ফলাফল আদায় করতে লক্ষ্যপানে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে হয়। তাই মনোনিবেশ কেন্দ্রীভূত করুন।
অ্যান্ড্রু কারনেগির মতে, ‘নিজের শক্তি, চিন্তা এবং মূলধন কেন্দ্রীভূত করো।’
ঝুঁকি নিতে শিখুন
জেপল গেটির মতে, ‘অনিশ্চয়তা ছাড়া সবচেয়ে বড় ব্যবসাও নিরর্থক, রুটিন ওয়ার্ক কোনও কাজের কিছু না।’
আর রবার্ট কিওস্কি বলছেন, ‘এখনকার দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে যারা ঝুঁকি নিতে জানে না তারাই ঝঁকিতে রয়েছে।’
মার্ক জাকারবার্গের সাফল্যে অতিমানবীয় কিংবা বায়বীয় কিছু ছিল না। সবচেয়ে কমবয়সী বিলিওনিয়ার হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ অবস্থায় যাওয়ার জন্য তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি তা বাস্তবায়ন করেছেন পকিল্পনা ও পরিশ্রম করে। ফেসবুক নিয়ে লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন তিনি। এজন্যই তিনি সফল হয়েছিলেন। এখানে ভাগ্যের কোনও ভূমিকা নেই।
রে ক্রকের মতে, ‘শুরু করুন। অধ্যবসায়ের বিকল্প পৃথিবীতে কিছু নেই। মেধাও হতে পারে না। সফল আর ব্যর্থ মানুষদের মধ্যে একটি বিষয়েই মিল রয়েছে তা হলো মেধা। জিনিয়াসরাও নয়, কারণ, পৃথিবী শিক্ষিত কর্মবিমুখে ভরপুর। অধ্যবসায় এবং সংকল্পই একমাত্র অসীম ক্ষমতা।’

Share This:

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Domain Hosting Market © 2015